প্রতিদিন কত কাপ কফি পান করা উচিত?
প্রিয় কফি লাভার! আপনি জানেন কি আপনার প্রতিদিন কত কাপ কফি পান করা উচিত? অর্থাৎ কি পরিমান কফি দৈনিক হারে পান করলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে, এবং অতিরিক্ত কফি পানের কারণে আপনার কি ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে; এই বিষয়েই বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী আজ জানাবো দৈনিক হারে কি পরিমান কফি পান করা উচিত। চলুন জানা যাক।
গবেষণায় বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, ডায়াবেটিস টাইপ ০২ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাসের মতো কফি পানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও অনেকেই মানসিক প্রশান্তি ও শক্তি বাড়াতে ও মেজাজকে সতেজ করতে প্রায়ই কফি পান করে থাকেন।
কিন্তু অন্যান্য গবেষকরা উদ্ধৃতি দিয়েছে যে, অতিরিক্ত মাত্রায় কপি খাওয়া হার্ট স্টোক এবং ডিমেনশিয়ার মত রোগের কারণ হতে পারে। তাহলে প্রশ্ন হলো: একজন স্বাভাবিক সুস্থ সবল ব্যক্তির জন্য দৈনিক হারে প্রতিদিন কতটা কফি কাপ কফি পান করা উচিত?
Content Summary
কত কাপ কফি পান করা উচিত?

এনবিসি নিউজ রিপোর্টের সূত্র অনুসারে, আমেরিকান সোসাইটি ফর নিউট্রিশনের একজন সদস্য ট্রিসিয়া সোটাকে উদ্ধৃত করেছেন: “স্বাভাবিকভাবে কপি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ নয়, তবে আমি কখনোই কাউকে অতিরিক্ত কফি পানের পরামর্শ দিব না।”
ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (Food and Drug Administration) অনুসারে, একজন সুস্থ সবল ব্যক্তির জন্য দৈনিক হারে 400 মিলিগ্রাম বা ৪/৫ কাপের বেশি কফি পান করা উচিত নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সাধারণত ১০ থেকে ১২ কাপ কফি পান করার পর ক্যাফিনের প্রভাব অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (Heartbeat) বা বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারে।
সুতরাং আমরা জানতে বুঝতে পারলাম: স্বাভাবিক মাত্রায় দৈনিক হারে ৪ থেকে ৫ কাপ পর্যন্ত কফি পান করা যেতে পারে। তবে বিশেষ কোনো কারণে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ কাপের বেশি পান করা উচিত নয়।
কি পরিমান কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ?
Psota (সোটা)’র ভাষ্যমতে, দৈনিক হারে ৪০০ মিলিগ্রাম বা ৪/৫ কাপ কফি পান করা ঘুমের সমস্যা সহ অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এ সম্বন্ধে তিনি বলেন, মানব শরীরের বিভিন্ন সহনশীলতার মাত্রা রয়েছে। সে অনুসারে স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় শরীরে দিনে একবার দুই কাপের বেশি কফি সহ্য করতে পারে না। সুতরাং আমি অবশ্যই বলব এফডিএ সুপারিশের তালিকা অনুসারে প্রতিদিন ২/৩ বার বা সর্বোচ্চ ৪/৫ বারের নিচে কফি পান করুন।
সোটা’র বক্তব্য অনুসারে, গর্ভবতী বা শিশুকে দুগ্ধ পান করানোর মহিলাদের জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২০০ মিলিগ্রাম কফি পান করা যেতে পারে। কারণ ক্যাফিন বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর মুখে যেতে পারে, যা নবজাতকের জন্য ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২১ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মহিলারা গর্ভাবস্থায় কম পরিমাণে কফি পান করেছিল অথবা পান করেন ই নাই, তাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম ছিল। এছাড়াও ক্যাফিন নবজাতকের ওজন হ্রাস করার জন্য দায়ী।
অ্যারিজোনার মায়ো ক্লিনিকের (Clinic in Arizona) একজন ডায়েটিশিয়ান নিকি কোটা (Nikki Cota) বলেন, চিনি বা ক্রিম যোগ করলে যারা ডায়াবেটিক বা কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত তাদের জন্যও কফি ঝুঁকিপূর্ণ।
শিশুদের জন্য কত কাপ কফি পান করা উচিত?
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ইরভিং মেডিক্যাল সেন্টারের (Te Columbia University Irving Medical Center) শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ ডেভিড বুখোলজ এর ভাষ্যমতে, উঠতি বয়সী কিশোর কিশোরীদের জন্য মাঝে মধ্যে সর্বোচ্চ ১০০ মিলিগ্রাম বা প্রায় ৪ – আউন্স (প্রায় ১ কাপ) কফি পান করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই সেটা অনিয়মিত হতে হবে, প্রতিদিন নিয়ম করে পান করা যাবে না (বরং মাঝে মধ্যে পান করা যেতে পারে)।
ডঃ ডেভিড বুখোলজ (Dr David Buchholz) আরও বলেন, কিশোর-কিশোরীদের জন্য কোন পরিমাণ ক্যাফিন স্বাস্থ্যকর নয়, তবে ব্র্যান্ডগুলো শিশুদের কাছে ক্যাফিনযুক্ত এনার্জি ড্রিংক ক্রমবর্ধমানভাবে বাজারজাত করছে। এটার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি করতে হবে।
মন্তব্যঃ স্বাস্থ্য সচেতনতা জন্য প্রতিদিন আপনার ঠিক কত কাপ কফি পান করা উচিত সে বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখবেন অতিরিক্ত পরিমাণ কফি পান করলে, আপনার হার্ট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।