ব্যবসা
Trending

কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি, নামের ছাড়পত্র (বাংলাদেশ)

Company name selection procedure - In accordance with the rules of the Government of Bangladesh, the name of the company is exempt

কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি জানাটা প্রত্যেক নতুন উদ্যোক্তা, কোম্পানির মালিক ও নতুন কোম্পানি পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ সকলের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় ও গুরত্বপূর্ণ। হয়তো আপনি একটি নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছেন। কিন্তু কোম্পানীর নামটি কি রকম হবে, কোন কোন বিষয়গুলো নামের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিতে হবে।

এবং কোম্পানির নাম নির্বাচনের সঠিক পদ্ধতি কি? সেই বিষয়াবলী আপনার হয়তো, সঠিকভাবে নাও জানা থাকতে পারে।

চিন্তার করার কোন কারণ নাই! আমি এই লেখাটিতে সেই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করছি।

কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি

প্রথমেই বলে নেই, এটি শুধুমাত্র কোম্পানীর ক্ষেত্রেই না, বরং এটি ফাউন্ডেশন এর নামের ক্ষেত্রেও একই রকম বিধানগুলো প্রযোজ্য হবে।

বিঃদ্রঃ বিধানাবলী রেজিষ্ট্রারার অফ জয়েন্ট স্টোক কোম্পানী’র দেওয়া খসড়া কপি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

যদি আপনি অফলাইনে কোম্পানির নামের রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য, প্রস্তাবিত নামের খসড়া তাদের কাছ থেকে উত্তোলন করেন।

তাহলে, আপনিও ঠিক নিচের ”বিধানগুলো” লিখিত আকারে দেখতে পাবেন।

পড়তে পারেন
সেরা অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

যাইহোক, নিচে রেজিষ্ট্রারার অফ জয়েন্ট স্টোক কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ব নামের ছাড়পত্র কপি-তে লিখিত আকারে দেওয়া কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।
এই সত্বাগুলো বা বিধানাবলী, আপনাকে অবশ্যই নামের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিতে হবে।

কোম্পানির নামের ছাড়পত্র

নামের ছাড়পত্রের সাধারণ শর্তাবলী

১) একই নাম হতে পারবে না, অর্থাৎ উচ্চারণ ও লেখার ক্ষেত্রে শুনতে ও দেখতে একই রকম মনে হয় এমন নাম হবে না।

** অর্থাৎ বাংলাদেশে বিদ্যমান কোন কোম্পানীর মত নাম রাখা যাবে না। যেমনঃ Bata একটি বিখ্যাত জুতা’র কোম্পানি।

সুতরাং, আপনি Biata বা Baita নামে কোন কোম্পানীর নাম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন না।

সামাজিক সতর্কতাঃ

সম্প্রতি প্রতক্ষ্য করা যায় যে: অনেকেই Biata, Rata, Pata ইত্যাদি নামে জুতা’র প্রোডাক্ট বের করেছে। যদিও দেখতে তিনটি নামই প্রায় একই রকম। অনেক সময় মানুষ হয়তো বা বুঝবে না । আবার অনেক সময় মানুষের সাথে অনেকেই এই ধরণের নকল নাম দিয়ে , প্রতারণা করছে।

কিন্তু মূলত এইরকম নাম ব্যবহার করা যাবে না। এবং সামাজিকভাবে লোক ঠকানো হচ্ছে।

২) আন্তর্জাতিক কোন কোম্পানী, প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার নামের অনুরপ কোন নাম হবে না।

** যেমনঃ প্রাণ, কোকাকোলা, ইউনিলিভারসহ ইত্যাদি কোম্পানী।
আবার সামাজিক সংস্থাঃ ইউনিসেফ।
*** কিন্তু যদি এমনটা হয় যে, কোন একটি কোম্পানী ইন্ডিয়া, পাকিস্তান বা বাংলাদেশের বাহিরে যেকোন নির্দিষ্ট একটি দেশে জনপ্রিয় কিন্তু আন্তর্জাতিক ভাবে জনপ্রিয় নয় এবং বাংলাদেশেও ঐ নামে আর কোন কোম্পানীর নাম রেজিষ্ট্রেশন করা নাই।

তাহলে , অনেক সময়ই ঐ নামে আপনার কোম্পানীর নাম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন।

তবে আমার মতে, এটি কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা নয়।

৩) দেশে দীর্ঘদিন যাবৎ চালু আছে এমন কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বিনোদন বা ক্রীড়া সংগঠনের নামের অনুরুপ কোন নাম হবে না।

৪ সরকারের অন্য কোন সংস্থার নিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠানের নামের অনুরুপ হবে না।

** অর্থাৎ সরকার ব্যবহার করে, এমন কোন ধরণের নাম প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবহার করা যাবে না।
যেমনঃ ওয়াসা। এটি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। “কর্পোরেশন” শব্দটি যেহেতু সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। সেজন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে “কর্পোরেশন” শব্দটি যোগ করা যাবে না।

৫) জাতীয় পর্যায়ে বিখ্যাত বা খ্যাতিসম্পন্ন ব্যাক্তির নামসহ বিশিষ্ট কোন নামের ক্ষেত্রে, ব্যাক্তি পরিবারের সদস্যদের অনুমতি এবং সরকারের অনুমোদন আবশ্যক হবে।

বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি জানুন
বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি জানুন

** যেমনঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের অন্যতম একজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাম। এখন আপনি যদি তার নাম বা নামাংশ সংযুক্ত যেকোন ধরণের প্রতিষ্ঠানের নাম রাখতে চান।

তাহলে, তার পরিবার ও সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।

৬) মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক কোন নামের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতি আবশ্যক হবে।

৭) সরকারি কোন কর্মসূচি বা সংস্থার নামের অনুরুপ কোন নাম হবে না।
** যেমনঃ একটি বাড়ি, একটি খাবার।
এটি একটি বাংলাদেশ সরকারের কর্মসূচি’র নাম। এখন আপনি চাইলেই এই নামে কোন কোম্পানী বা যেকোন ধরণের ফাউন্ডেশন করতে পারবেন না।

৮) বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের নামের অনুরুপ বা রাজনৈতিক কোন শ্লোগান বা কর্মসূচির নামের অনুরুপ কোন নাম হবে না।

৯) অশ্লীল, গালি বা ব্যঙ্গাত্নক শব্দ বিশিষ্ট কোন নাম হবে না।

১০) জাতি, ধর্ম অথবা সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে এমন কোন নাম হবে না।

** যেমনঃ উগ্রবাদীদের সংস্থাগুলোর নাম, কথিত সাংস্কৃতিক নামে কুসংস্কৃতি-মনা কোন নাম। যেগুলো জাতি, ধর্ম বা কোন সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
** যেমনঃ মুসলিম কল্যাণ ফাউন্ডেশন, হিন্দু কল্যাণ ফাউন্ডেশন ইত্যাদি নাম গুলোও আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে না হলেই ভালো।

১১) পূর্ব হতে প্রতিষ্ঠিত (অন্ততপক্ষে ১০ বছরের পুরাতন) সামাজিক প্রতিষ্ঠান তার মূল নামে নিবন্ধন করতে চাইলে সাংগঠনিক কমিটির রেজুলেশনসহ নামের ছাড়পত্রের জন্য ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে আবেদন করবেন।

১২) সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা ক্রীড়া সংগঠনকে কোম্পানী হিসাবে নিন্ধনের ছাড়পত্রের জন্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি আবশ্যক হবে।

১৩) নামের ছাড়পত্রের বর্ণিত শর্তাবলীর কোন একটি ভঙ্গ হলে আরজেএসসি কর্তৃপক্ষ, গৃহীত নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত দিতে পারবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নাম পরিবর্তন না করা হলে,

নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে আপত্তিকৃত নামটি প্রতিস্থাপন করা হবে অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি তার নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে পরিচিত হবে।

১৪) শুধুমাত্র নামের ছাড়পত্র নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে না।

** অর্থাৎ, নামের ছাড়পত্র নেওয়ার সাথে সাথেই আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন একটিভিটিস নিবেন না। যেমনঃ মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিং বা এডভার্টাইজিংসহ ইত্যাদি।
কারণ, নামের ছাড়পত্র দেওয়ার পরও আরজেএসসি কর্তৃপক্ষ পুনরায়, খুব ভালো মত নামের তল্লাশি দিয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনাকে যেই নাম’টির জন্য ছাড়পত্র দিল।

তা আগেই অন্য কেউ রেজিষ্ট্রি করেছে ফেলেছে কিনা। তার পুনঃতল্লাশি চালায়।

কোম্পানির নাম নির্বাচনের আগে করণীয়

১) প্রথমেই আমাদের দেখতে হবে যে, আপনি আপনার কোম্পানির জন্য যেই নামটি পছন্দ ও বাছাই করেছেন। সেটি “রেজিষ্টার অফ জয়েন স্টোক ” এর তালিকায় ফাঁকা আছে কিনা।

কেননা, আপনি যেই নামটি আপনার কোম্পানির জন্য পছন্দ করেছেন, সেই নামটি যদি “রেজিষ্টার অফ জয়েন স্টোক” এর তালিকায় ফাঁকা না থাকে।

তাহলে কিন্তু আপনি সেই নামে আপনার কোম্পানির নাম রাখতে পারবেন না।

কিভাবে বুঝবেন, নামটি ইতোপূর্বে রেজিষ্ট্রেশন করা হয়েছে কিনা?

ধরুন, আপনার প্রস্তাবিত কোম্পানির নামটি হলোঃ অ্যাগোরা ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেড।

এখন আপনি নিচের নিয়মটি অনুসরণ করুনঃ

১) প্রথমে আপনাকে রেজিষ্ট্রারার অফ জয়েন্ট স্টোক ওয়েবসাটে যেতে হবে।
২) এজন্য সবার প্রথমে ( app.roc.gov.bd )
লিংকটিতে ক্লিক করুন। এবং সাইটে প্রবেশ করুন।

৩) তারপর, Entity Type এর স্থানে Company সিলেক্ট করুন।
৪) এবং Entity Name এর স্থানে আপনার প্রস্তাবিত নামের প্রথম দু’টি শব্দ ইংরেজিতে লিখুন।

যেমনঃ Agura Industries (Limited লেখার প্রয়োজন নাই, কারণ রেজিষ্ট্রি অফ জয়েন স্টোক সাইটটিতে শূধুমাত্র আপনার কোম্পানির জন্য প্রথম দুটি শব্দ দিয়ে সার্চ ফলাফল দেখায়)

৫) তারপর, আপনার ক্যাপচাটি পূরণ করুন।
৬) সবশেষে, Search বাটনে ক্লিক করুন।
৭) যদি এই নামে পূর্বে কেউ রেজিষ্ট্রি করে না থাকে। তাহলে, আপনি No Record Found লেখাটি দেখতে পারবেন।
৮) তারপর আপনি Apply for name clearance এর উপর ক্লিক করে, প্রদর্শিত দিক-নির্দেশনা অনুসারে আপনার কাঙ্খিত নামটি রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন।

কোম্পানির নাম নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার আরো কিছু জানার থাকলে। কমেন্ট বক্সে লিখে জানান। ধন্যবাদ।।

Hafizur Rahman

Hi, I am Hafizur Rahman. My profession is writing articles and my hobby is cooking various items. I eat less oily food but love nutritious vegetables and meat. I regularly publish the dishes I like to eat in the form of recipe articles on TastyRecipeBD.com.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *