সফল হওয়ার ১০টি উপায় – ব্যর্থতা কাটিয়ে সাফল্য পাবেন আপনিও
জেনে নিন সফল হওয়ার ১০টি উপায় নিয়ে এই আর্টিকেলটির বিশেষ আয়োজনটি। আচ্ছা! সাফল্য কেই বা না পেতে চায়? সফলতাকে তো অনেকেই রাতের শেষের রেল গাড়িটার সাথে তুলনা করে। যেনো সবাই ছুটছে তার দিকে।
একজন মানুষ ধর্মে, কর্মে, গোত্রে বা জাতিতে সাদা-কালো, উচু-নিচু যেরকমই হোক না কেন। সবাই স্বপ্ন দেখে সফল হওয়ার জন্য। এমনকি জীবণের ঠিক কোনো এক মূহুর্তে এসে, সবাই একটা দ্বিধায় নিজের সাথে দন্দ্ব করতে থাকে। এবং সবার মনে ঠিক একটা প্রশ্ন তো জাগেই যে, রাতের শেষের রেলগাড়িটা কি ধরতে পারব?
আর এই দ্বিধা-দ্বন্দের অবসান ঘটাতে। এবং সত্যিকারের সাফল্য অর্জন করার জন্য কেউ কেউ দিনের পর বহুদিন চেষ্টা করে যান। কেউবা আবার মাঠে নেমেই গোল দেওয়ার মত, খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে সফলতাকে ছিনিয়ে নেয়।
আবার আপনার আশে-পাশে এমন টাইপেরও লোক পাবেন। যারা বিনা পরিশ্রমে সাফল্য অর্জন করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে তারা কখনই সফল হতে পারে না।
সাফল্য বিষয়টিকে আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর সঙ্গে তুলনা করা যায়। ঘুড়িকে যত ওপরে ওড়ানোর চেষ্টা করবেন ততই আপনাকে বাতাসের বিরুদ্ধে সুতায় টান দিতে হবে। বাতাসের সঙ্গে তাল মেলালেই ভজকট, ঘুড়ি নিচে নামতে শুরু করবে।
Content Summary
সফল হওয়ার ১০টি উপায়
বিখ্যাত মার্কিন লেখক জেমস অ্যালটুচ্যার। তিনি লেখকের খ্যাতি অর্জন করা ছাড়াও বিশিষ্ট বিনিয়োগকারী হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। এছাড়া তিনি একজন সফল উদ্যোক্তাও।
যাহোক, তিনি কোরা ব্লগে সফল হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উপায় নিয়ে লিখেছেন। সেগুলোর সমন্বয়ে। দৈনন্দিন জীবণে প্রাত্যহিক কর্মে সফল হওয়ার কার্যকরী উপায়গুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
সবকিছুই আজকের বিষয়
সব সময় মনে রাখবেন। যেটা চলে গেল। সেটা আপনার অতীত। যা কখনই ফিরে আসবে না।
আর ভবিষ্যত?
সেটা তো আপনার জন্য সম্ভাবনাময় আপেক্ষিক বিষয়।
সুতরাং বর্তমানকে বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিন। আর সাফল্য পেতে হলে, আজ থেকেই কাজ করতে শুরু করুন।
নিজের জন্য কাজ করুনঃ
চেষ্টা করবেন। প্রত্যেকটি কাজ নিজের জন্য করতে। তবে কাজের ব্যস্ততার মাঝেও আপনার পরিবার ও নিজের উন্নতির জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করার চেষ্টা করবেন। এবং প্রতিদিন ১ শতাংশ হলেও নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা করবেন।
হ্যাঁ-না বলুন ভেবেচিন্তে
“মুখের কথা ও বন্ধুকের গুলি” একবার বেরিয়ে গেলে। তা আর ফেরানো যায় না। তাই কোন কিছু বলার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন। যে, কথাটি সঠিক কিনা?
আর কোন কিছুতে সম্মতি প্রকাশ বা অসম্মতি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে। বা যেকোন ক্ষেত্রে হ্যাঁ-না ভেবেচিন্তে বলবেন।
কখন হ্যাঁ বলা উচিত?
আপনার মতের সাথে মিল আছে। এমন টাইপের বুদ্ধিবৃত্তিক বা সৃজনশীল যেকোনো সুযোগ বা সুবিধা মিললে: হ্যাঁ বলুন।
এছাড়াও আনন্দ কিংবা মনন বিকাশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এমন ধরণের কাজের ক্ষেত্রে সব সময়ই হ্যাঁ বলতে চেষ্টা করুন।
সরলভাবে ভাবুন, শিখুন
যেকোন কাজ ও উদ্যোগ গ্রহণ বিবেচনা করতে। সাধারণভাবে ভাবতে শিখুন।
আচ্ছা! বলতে পারেন?
শিশুরা জীবণের সরলতা খুঁজে পায় কেন?
এর কারণ হলো: তারা সবকিছু সরলভাবে ভাবার চেষ্টা করে। প্রতিদিন কিছু সময় হলেও, শিশুদের মতো ভাবার চেষ্টা করুন। তাহলে, পৃথিবীটা যে কতটা নির্মল! সেটা অনুভব করতে পারবেন। নিয়মিত ধ্যান করার অভ্যাস করতে পারেন। এতে আপনার ভাবনাশক্তি ও সৃজনশীল মনের জোর বাড়বে।
পড়তে হবে অনেক
মানুষ হিসেবে যে আমরা সবাই সবকিছু জানি না। এটা সবাইকেই স্বীকার করতে হবে। জানার জন্য প্রচুর পড়তে হবে। বই, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ব্লগ বা যেকোন মাধ্যমেই হোক। জানতে হলে, পড়তে হবে। ফিকশন, নন-ফিকশন সব ধরনের বই ই পড়তে হবে।
স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন | সফল হওয়ার আরেক নীতি
মানুষ হিসেবে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নিতান্তই স্বাস্থ্যের সাথে আমাদের অভ্যাসগুলোও ওতপ্রোতভাবে জড়ানো।

মনে রাখবেন: সহজেই বদভ্যাসে জড়ানো সম্ভব হলেও, সুঅভ্যাস অর্জনে আপনাকে নিজের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
মানুষ এখন সৃজনশীলতায় বিশ্বাসী। তাই নিজের সৃজনশীলতার বিকাশে, নজর দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং বুদ্ধিবৃত্তিক আবিষ্কারের প্রতি জোড় দিতে হবে।
আর এজন্য আপনার শরীরের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য, যদি নিয়মিত ব্যায়ামও করতে হয়। তাহলে আপনার সময় ও সুবিধা মতো তাই করবেন।
বহুমাত্রিক সাফল্যের জন্য চেষ্টা করুন
ইবে ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা ও একজন সফল মার্কিন উদ্যোক্তা জন ওয়ারেন বাফেন। তার মতে, শুধুমাত্র এক জায়গায় বিনিয়োগ করা উচিত নয়। বরং তিনি বহুমাত্রিক বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। যেন একটি বিনিয়োগে ব্যর্থ হলেও অন্য জায়গায় সামনে এগোনোর সুযোগ থাকে।
ভার্জিন Group এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার রিচার্ড ব্রান্সন ৪০০ টিরও বেশি কোম্পানীর মালিক। কিন্তু তিনি কিভাবে সফল হয়েছিলেন, তা কি জানেন?
তিনি একটি বিষয়ে সফল হওয়ার পরই। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্য বিষয়ে মনঃসংযোগ করতেন।
কোন এক জরিপের তথ্য অনুসারে,
আমেরিকায় মিলিয়নিয়ররা কমপক্ষে পাঁচটি ভিন্ন রকমের উৎস্য থেকে অর্থ উপার্জন করেন।
মোদ্দাকথা: আমরা যাদেরকে সফল ও সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করি। তাদের কেউই একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকেননি। বরং সুযোগ ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। বহুমাত্রিক কাজে বিনিয়োগ করেছেন।
ভয় বনাম জড়তা | সাফল্যের জড়তা
পাছে লোকে তো কিছু বলবেই। আমাকেও অনেকে সামনা-সামনি খুব প্রশংসা করে। আবার হয়তো, পিছনে পিছনে ( আমার অনুপস্থিতিতে ) অনেক সমালোচনাও করে। এটাই স্বাভাবিক।
তাই বলে কি, সমালোচকদের ভয়ে পিছিয়ে থাকবো?
মনে রাখবেন, এই পৃথিবীতে যখন আপনি সফল ও প্রতিষ্ঠিত হবেন। তখন সবাই বাহ্ বাহ্ দিবে। আপনি সবার প্রশংসায় হয়তো মুখরিতও হবেন। কিন্তু,
কিন্তু যখন আপনি ব্যর্থ হবেন। তখন সবাই আপনাকে এড়িয়ে চলবে। বিপদের সময় তখন হয়তো আপনার আশ-পাশের ও কাছের মানুষগুলোকে হাত বাড়াতে দেখবেন না। তাই নিজেকে আবিষ্কার করতে শিখুন সর্ব পরিস্থিতিতে। এবং নিজের আত্নপ্রকাশ ঘটাতে সচেষ্ট থাকুন সর্ব ক্ষেত্রে।
পড়ুনঃ যে কোন কাজেই সফল হওয়ার উপায়